নিজস্ব প্রতিনিধি:
রেশন দোকানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বাংলা সহায়তা কেন্দ্র চালু হবে নাকি নরেন্দ্র মোদির কমন সার্ভিস সেন্টার চালু হবে তা নিয়ে নয়া সংঘাত বাঁধল কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে। রেশন দোকানগুলি থেকে অনলাইনে বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা প্রদান নিয়ে বিরোধের সূত্রপাত। মোদি সরকার চাইছে, রেশন দোকান থেকে অনলাইন সরকারি পরিষেবা দিতে গোটা দেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গেও কমন সার্ভিস সেন্টার চালু করা হোক। কিন্তু মমতা সরকার তা মানতে নারাজ। তাঁরা চাইছে রাজ্য সরকারের অধীনে থাকা বাংলা সহায়তা কেন্দ্র চালু হোক। আর এই নিয়েই বিরোধ বেঁধেছে দুই সরকারে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চালু করা প্রকল্পগুলির মধ্যে বাংলা সহায়তা কেন্দ্র অন্যতম। রাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে থাকা এই সব কেন্দ্র থেকে সরকারের ৪০টি দফতরের ৩২৩ ধরনের পরিষেবা অনলাইনে পান সাধারণ মানুষ। সরকারি পরিসংখ্যান থেকে জানা যাচ্ছে, এখন রাজ্যে ৩,৫৬১টি বাংলা সহায়তা কেন্দ্র রয়েছে। আরও ১,৪৬৪টি কেন্দ্র খোলার প্রক্রিয়া চলছে। প্রধানত সরকারি অফিস, পুরসভা-পঞ্চায়েত কার্যালয়, গ্রন্থাগার সহ বিভিন্ন সরকারি ভবনে রয়েছে বাংলা সহায়তা কেন্দ্রগুলি। এই কেন্দ্রের সংখ্যা আরও বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে রাজ্যের প্রায় ২১ হাজার রেশন দোকানে বাংলা সহায়তা কেন্দ্র চালু করা গেলে এক ধাক্কায় এই ধরনের কেন্দ্রের সংখ্য অনেকটাই বাড়ানো সম্ভব বলে মনে করছেন রাজ্যের খাদ্যদফতরের কর্তারা।
অন্যদিকে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০টি রাজ্যে রেশন দোকানে কমন সার্ভিস সেন্টার চালু করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই রাজ্যগুলির প্রায় ৩৩ হাজার ১৮৮টি রেশন দোকান এর জন্য প্রয়োজনীয় আইডি পেয়ে গিয়েছে। যদিও গোটা দেশের নিরিখে এখনও লক্ষ্যমাত্রার ১০ শতাংশও পূরণ হয়নি। এই সেন্টারগুলি থেকে অনলাইনে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন পরিষেবা ছাড়াও ব্যাঙ্কিং সহ নানা বাণিজ্যিক কাজ করা যায়। তবে রেশন দোকানগুলি থেকে এই পরিষেবা দেওয়া শুরু হলে তা সাধারণ মানুষের আদৌ কতটা কাজে লাগবে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। পশ্চিমবঙ্গে এখনই প্রায় ৫১ হাজার কমন সার্ভিস সেন্টার নথিভুক্ত আছে। এই সেন্টার পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের সংগঠনের এক নেতা জানিয়েছেন, কেন্দ্র এখন যে ব্যবস্থা করেছে, তাতে যে কেউ অনলাইনে আবেদন করে নতুন কমন সার্ভিস সেন্টার খুলতে পারেন। বেশি কেন্দ্র হয়ে যাওয়ায় ব্যবসা এমনিতেই কমে গিয়েছে। তাই রেশন দোকানে কমন সার্ভিস সেন্টার চালু হলে কাজের কাজ কিছু হবে না।