এসপ্লাস ডেস্ক: সরকারী চাকরি যেনো সবার কাছেই সোনার হরিণ ৷ শিক্ষাজীবন শেষ করেই যেনো সবাই সেই সোনার হরিনের সন্ধানে দিনরাত এক করে ফেলছে ৷ যুগের সাথে তাল মিলিয়ে যেমন শিক্ষাব্যাবস্থায় পরিবর্তন এসেছে তেমনি পরিবর্তন এসেছে সরকারী চাকরি পাবার ক্ষেত্রেও ৷ আগে সরকারী চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে যতটা সহজ ছিলো তেমনি শিক্ষা ব্যাবস্থায় ও ছিলো সহজতা ৷ বর্তমানে পরিবর্তন যেনো সব ক্ষেত্রেই এসেছে ৷ সরকারী চাকরি পেতে একদিকে যেমন নিজেকে তৈরী করতে হয় তেমনি সাথে সাথে কড়া প্রস্তুতিও নিতে হয় ৷ আসুন জেনে নিই সরকারী চাকরি পেতে আপনার সহায়ক হবে কোন বিষয়গুলি –
আপনার জন্য উপযুক্ত চাকরির ক্ষেত্র বাছুন :
চাকরির ক্ষেত্রে প্রথমেই যে ভূলটি অনেকেই করে থাকেন তা হচ্ছে নিজের জন্য উপযুক্ত ক্ষেত্র বাছাই না করা ৷ ধরুন আপনি পড়াশুনা করেছেন সায়েন্স নিয়ে, আপনার জন্য সায়েন্স রিলেটেড চাকরীর ক্যাটাগরি নির্বাচন করাটা ভালো ৷ তাতে আপনার পূর্বের অভিজ্ঞতা ও পড়াশুনোকে শতভাগ কাজে লাগানো সহজ হবে ৷ অনেকের ধারনা সব সরকারী চাকরি একই ধরনের প্রশ্নপত্র করে থাকে ৷ তবে এটি ঠিক নয় ৷ আবার আপনার স্কিলের বাইরে কোনো বড় পদ নির্বাচন করলে সেটি নিয়েও আপনাকে বিড়ম্বনার শিকার হতে পারেন ৷ তাই প্রথমেই নিজের মেধা ও স্কিল নিয়ে ভাবুন ৷ তারপর কোন চাকরির জন্য উপযুক্ত সেটির জন্য প্রস্তুতি নিন ৷
চাকরি পাবার জন্য স্কিল ডেভেলপ করুন :
সরকারী চাকরি পেতে যে বিষয়গুলি অত্যন্ত জরুরী তার মধ্যে প্রথম কাতারেই রয়েছে প্রতিষ্ঠান নির্বাচন ৷ সরকারী চাকরির জন্য নিজেকে তৈরী করতে হলে আপনাকে প্রথমেই নিজেকে সেই চাকরীর জন্য উপযুক্ত হিসাবে তৈরী করতে হবে ৷ ঘরে বসেই প্রস্তুতি নিয়ে আপনি হয়তো সরকারী চাকরি পেতে পারেন তবে একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানিক সহযোগীতা আপনার সেই পরিকল্পনাকে আরও বহুদূর এগিয়ে দেবে ৷ একজন চাকরি প্রার্থীর কাছে সবথেকে বড় যে ব্যাপারটি সেটি হচ্ছে উপযুক্ত গাইডলাইন ৷ দেখা গেল, আপনি আপনার সাবজেক্ট এ সেরা কিন্তু চাকরির পড়াশুনা টা উপযুক্ত গাইডলাইন না মেনে করার কারনে আপনি কাঙ্খিত ফলাফল পাচ্ছেন না ৷ এক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সরকারী চাকরির জন্য প্রশিক্ষনের পাশাপাশি অনেক ধরনের মডেল টেস্ট বা পাকাপাকি স্কিল ডেভেলপমেন্ট করে থাকে যা একজন চাকরি প্রার্থীর জন্য অত্যন্ত জরুরী ৷ তাই দেরি না করে আজই এমন কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করুন ৷
নিজেকে সরকারী চাকরির জন্য যোগ্য করে তুলুন :
প্রথম ধাপের পরই নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে ৷ তার জন্য প্রয়োজন যথেষ্ঠ সময় দেয়া ৷ সরকারী চাকরি খুবই প্রতিযোগীতার একটি ক্ষেত্র ৷ দেখা যায় , একটি পদের বিপরীতে সাধারনত কয়েক হাজার প্রতিযোগী আবেদন করে থাকে ৷ তাই নিজেকে ঠিক ভিন্নভাবে তৈরী করতে হবে ৷ জানার পরিধি বাড়াতে হবে বহুগুন ৷ সরকারী চাকরির ব্যাপক চাহিদা থাকার কারনে প্রত্যেকেই নিজের মতো করে প্রস্তুতি নিবে ৷ আপনাকে সেই ধারাবাহিকতা থেকে বের হয়ে নতুন কিছু করতে হবে ৷ বইয়ের বাইরে সাম্প্রতিক ঘটনাবলী, আন্তর্জাতিক নানা বিষয় নিয়ে আপনাকে পড়তে হবে ৷ তার পাশাপাশি সেটির চর্চা করতে হবে ৷ এককথায় রুটিন ওয়ার্ক করুন ৷ শুধু চাকরি পেতে নয়, এমনভাবে পড়ুন যেনো সেটি আপনি জানার জন্যই পড়ছেন ৷ তাহলে সহজে সেটি আপনার মনে থাকবে যা দীর্ঘমেয়াদি অন্যসব সরকারী চাকরির পড়াশুনায় কাজে লাগবে ৷
চমৎকার একটি বায়োডাটা তৈরী করুন :
চাকরির ক্ষেত্রে বায়োডাটা বা সিভি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন বিষয় ৷ আপনার সিভিই হচ্ছে চাকরি দাতার কাছে আপনার পরিচয় ৷ আপনার কি যোগ্যতা আছে , আবেদিত চাকরির জন্য আপনি উপযুক্ত কিনা ইত্যাদি সবকিছুই বহন করে সিভি ৷ বলা হয় সিভি হচ্ছে ফাস্ট সাইট অব জব ৷ সিভি তৈরীর ক্ষেত্রে আপনাকে যত্নশীল হতে হবে ৷ সুন্দর সিভি তৈরী করতে আপনার বেশকতগুলো বিষয় যেমন , শিক্ষাগত যোগ্যাতা , অভিজ্ঞতা ইত্যাদিকে চাকরীর আলোকে লিপিবদ্ধ করলে সিভিটি চাকরিদাতার কাছে গ্রহনযোগ্য মনে হয় ৷ অনেক ক্ষেত্রে আমরা একই সিভি আলাদা চাকরির জন্য ব্যাবহার করে থাকি ৷ এটি না করে, প্রতিটি চাকরীর জন্য চাহিদা অনুযায়ী সিভি উপস্থাপন করাটা অত্যন্ত জরুরী ৷
মাথা ঠান্ডা করে চাকরির ইন্টারভিউ দিন :
লিখিত পরীক্ষায় টিকতে পারলে মাথা ঠান্ডা করে চাকরির ইন্টারভিউ দিন ৷ আপনি কখনই মনে করবেন না যে প্রথমবার সরকারী চাকরির জন্য আবেদন করলেই আপনি চাকরি পেয়ে যাবেন ৷ আপনাকে বারবার ইন্টারভিউ দিতে হতে পারে, আর তার জন্য আপনার জ্ঞানের সীমা বাড়ানোটা অত্যন্ত জরুরী ৷ বারবার ইন্টারভিউ দিলে তার জন্য যে অভিজ্ঞতা সঞ্চার হয় সেটি পরবর্তী চাকরির জন্য বেশ কাজে আসে ৷ ইন্টারভিউ এর ক্ষেত্রে অনেক সময় তাড়াহুড়ো করে জানা প্রশ্নের উত্তর ভুলে যেতে হয় ৷ তাই ইন্টারভিউবোর্ডে কখনোই তাড়াহুড়ো করবেন না ৷ কোন কিছু জানতে চাইলে ধীরেসুস্থে উত্তর দিন ৷ সাম্প্রতিক বিষয়াবলী নিজের একেবারেই ঠোটস্ত করে রাখুন ৷ ইন্টারভিউ বোর্ডে সাধারণত যেসব প্রশ্নগুলো করা হয় তার বেশিরভাগই সাম্প্রতিক ঘটনাবলী এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইস্যু থেকেই হয়ে থাকে ৷ আপনি যে প্রতিষ্ঠানে থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন সেখানে তারা অনেক ক্ষেত্রেই মডেল ইন্টারভিউ এর ব্যবস্থা করে ৷ এ সমস্ত মডেল ইন্টারভিউগুলির অভিজ্ঞতা আপনার ইন্টারভিউ তে বেশ কাজে লাগবে ৷
সবথেকে বড় যে ব্যাপারটি সেটি হচ্ছে , পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই ৷ আপনাকে লক্ষ্য স্থির করে , রুটিন মেনটেন করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে ৷ নিজের উপর আস্থা রাখতে হবে ৷ সরকারী চাকরি একদিন না একদিন আপনার হাতে ধরা দেবেই ৷