মঙ্গলবার , ১৯ অক্টোবর ২০২১ | ১৮ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
  1. আন্তর্জাতিক
  2. কলকাতা
  3. খেলাধুলা
  4. চাকরী
  5. ট্রেন্ড
  6. দেশ
  7. পশ্চিমবঙ্গ
  8. প্রযুক্তি
  9. বানিজ্য
  10. বাংলাদেশ
  11. বিনোদন
  12. বিশেষ
  13. ভাইরাল
  14. মতামত
  15. রাজনীতি

আমি চুপ কেন ?

প্রতিবেদক
splusnews
অক্টোবর ১৯, ২০২১ ৩:২৩ অপরাহ্ণ
Auto Draft

স্নিগ্ধা পাত্র : গত কয়েকদিন ধরেই সামাজিক মাধ্যম বলুন আর দেশেই বলুন, সেখানে একটা খবরের চর্চা খুব ভীষনভাবে হচ্ছে ৷ বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দিরে জেহাদি হামলা, ভাংচুর , লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, হত্যা, শ্লীলতাহানী ৷ তার রেশ পড়েছে শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয় বিভিন্ন রাজ্যে ৷ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে যেমন প্রতীবাদ চলছে , তেমনি প্রতিবাদ হচ্ছে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ৷ গত কয়েকদিন ধরেই রাজ্যে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে হাসিনা সরকারকে আবেদন জানিয়েছেন তারা ৷ একই আবেদন রাজ্যের সকল হিন্দু সম্প্রদায়ের ৷

বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ একই বৃন্তে দুটি ফুল। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতিতে দু-একটি ছাড়া বড় কোনো পার্থক্য নেই ৷ সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্ন ছেড়েই দিলাম ৷ যে সম্প্রদায়ের উপর মৌলবাদিরা এরকম জেহাদি হামলা চালিয়েছে তারাও মানুষ ৷ যখন ভারতে মুসলিমরা নির্যাতিত হয়েছিল তখন এই আমিই কেন্দ্রকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমন করেছিলাম ৷ হাসিনা সরকার যা করছে, কেন্দ্র ও তাই করেছিল ৷

ভোটের সময় আমার মুখে ছিল অসাম্প্রদায়িকতার নীতিকথা , সহনশীলতার কথা ৷ বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর হামলা করা হলো, তাদের বাড়িঘর লুটপাট করা হলো, আর আমি তাদের প্রতিবেশী বন্ধু হয়েও সেদেশের সরকারকে অশান্তি নিয়ন্ত্রন করার জন্য বিন্দুমাত্র বলতে পর্যন্ত পারলাম না ৷ পারিনি ফেসবুক কিংবা টুইটারে এর প্রতিক্রিয়া জানাতে ৷ ইউএন তাদের বিবৃতি দিয়েছে ৷ জাতিসংঘ বিষয়টি জেনেছে ৷ তবে কি আমিও ধর্মভিত্তিক রাজনীতি করে সংখ্যালঘুকেই ভোটব্যাংক হিসাবে ব্যাবহার করছি ? আর ভোটের রাজনীতি কি আমাকে বিবেক ও স্বপ্রজাতির থেকে ভীনগ্রহী প্রানীতে পরিণত করেছে ? এই আমিই কিন্তু আবার একটি সম্প্রদায়ের ধর্মগুরুর জন্মদিনে শুভেচ্ছাবার্তা জানাচ্ছি ৷ অপরদিকে আমি নিজেকে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল দাবী করি, মুখে  হিন্দুত্ববাদের কথা বললেও হিন্দুদের উপর নির্যাতনের জোরালো প্রতিবাদ করতে পারিনা ৷

চলুন ইতিহাসে ফিরে যাই ৷ আফগানিস্তানের উত্তর-পশ্চিমে গজনী ও হেরাতের মধ্যবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত ছিল ঘুর রাজ্য। ঘুর রাজ্য প্রথমে গজনীর অধীনে ছিল। গজনীর দুর্বলতার সুযোগে ঘুর রাজ্য স্বাধীন হয়ে যায় এবং ক্রমশ শক্তি সঞ্চয় করে। এই দুই রাজ্য পরস্পর বিবাদে লিপ্ত ছিল। এই বিবাদের সূত্র ধরে ১১৭৩ খ্রিস্টাব্দে ঘুর শাসক গিয়াস উদ্দিন মোহাম্মদ গজনী রাজ্য দখল করেন এবং তিনি তাঁর ভ্রাতা মইজুদ্দিন মহম্মদ বিন সামকে গজনীর শাসনকর্তা নিয়োগ করেন। ইনি ভারতের ইতিহাসে মহাম্মদ ঘুরি নামে পরিচিত। বড় ভাই এর অধীনে নিযুক্ত সেনাপতি হিসাবেই মোহাম্মদ ঘুরি ভারতে অভিযান করেছিলেন। তারপর ধীরে ধীরে সম্রাজ্যের বিস্তার ঘটান ৷ সেই সময়ের হিন্দু রাজারা ঘুরির বিরুদ্ধে যুদ্ধে টিকতে পারেনি কারন তারা বিচ্ছিন্ন ছিল ৷ তারা আলাদাভাবে ঘুরির সাথে খন্ড যুদ্ধে পরাজিত হয় ৷ এতে রাজ্য দখল যেমন সহজ হয়েছিলো তেমনি মুসলিম সম্রাজ্ঞ্যের বিস্তারেও ব্যাপক ভূমিকা রেখেছিল ৷ সেখানে মুসলিমরা ছিল একত্রিত , আর হিন্দুরা বর্ণবৈষম্য ও নানা কারনে খন্ডিত ৷ তাই ধীরে ধীরে সব আয়ত্বে আসে ঘুরির ৷

বাংলাদেশে যে সাম্প্রদায়িক হামলা হলো সেটিকেও আমি সাম্প্রদায়িক হামলা বলছি না ৷ কারন সেটা তাদের দেশের আভ্যন্তরিন বিষয় ৷ আমার তা নিয়ে নাক না গলানোই উত্তম ৷ তবে প্রশ্নটা হচ্ছে অসাম্প্রদায়িক চেতনার আমি পাশের বাড়ির নির্যাতিত মানুষের জন্য কি ভূমিকা রেখেছি ? ভোটের রাজনীতির জন্য আমি কি বিবেক , মানবিকতা, প্রতিবেশীর জন্য সহমর্মিতা ভূলে যেতে বসেছি ৷ তবে কি ভোটের গড়ে সিঁধ কাটার আশংকায় আমি চুপ ?

সর্বশেষ - পশ্চিমবঙ্গ

আপনার জন্য নির্বাচিত